ইংরেজি বছরের শেষ দিন থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপনের ক্ষেত্রে বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এবার বিশেষ করে ফানুস উড়ানোর ক্ষেত্রে কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে সব ধরনের পানশালা।ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক শনিবার বেলা ১১টার দিকে মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে থার্টি ফার্স্টের নিরাপত্তা সংক্রান্ত ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপনে কোথাও আতশবাজি, পটকা ফোটানো ও ফানুস উড়ানো যাবে না। ঢাকা শহর যেহেতু অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা এবং এর আগেও আমরা দেখেছি ফানুস উড়ানোর কারণে নানা ধরনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, ফলে এবার আমরা ফানুস উড়ানো থেকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছি। এর ব্যত্যয় হলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’
থার্টি ফার্স্টে রাজধানীজুড়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত সাদা পোশাকে এবং নিজেদের পোশাকে পুলিশ নিয়োজিত থাকবে বলে জানান খন্দকার গোলাম ফারুক।
তিনি বলেন, ‘রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে চেকপোস্ট বসানো হবে, যেন কোনো ধরনের নাশকতার উদ্দেশে জঙ্গি বা সন্ত্রাসীরা যাতায়াত করতে না পারে। পাশাপাশি উগ্র ও জঙ্গিগোষ্ঠী যেন কোনো ধরনের নাশকতার তৎপরতা চালাতে না পারে সেজন্য আমরা সতর্ক থাকবো। সোয়াট, বোম ডিসপোজাল টিম এবং ডগ স্কোয়ার্ড প্রস্তুত থাকবে।’
সব প্রস্তুতি থাকলেও থার্টি ফার্স্ট নাইটে কোনো জঙ্গি হামলার আশঙ্কা নেই বলে জানান ডিএমপি কমিশনার। বলেন, ‘জঙ্গি পালানোর মতো একটা ঘটনা ঘটে গেছে, আমাদের অভিযান চলছে জঙ্গিরা ধরা ও পড়ছে। কিন্তু এজন্য থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে স্পেসিফিকলি কোনো ধরনের জঙ্গি হামলার থ্রেট নেই।’
নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে গিয়ে যেন কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে এজন্য কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রাস্তার মোড়, উন্মুক্ত স্থান কিংবা ফ্লাইওভারের ওপর কোনো ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উদযাপন করা যাবে না। কোথাও কোনো ডিজে পার্টির আয়োজন করা যাবে না। হোটেল এবং ক্লাবে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় শুধুমাত্র ইনডোর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যাবে।’
মাদক দ্রব্যের অপব্যবহার নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘৩১ ডিসেম্বর থেকে শুরু করে পহেলা জানুয়ারি সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত রাজধানীর সব বার-ক্লাব বন্ধ থাকবে। মাতাল অবস্থায় কোনো চালক যেন গাড়ি না চালাতে পারে এজন্য পুলিশের পক্ষ থেকে কাউকে সন্দেহ হলে তাৎক্ষণিক পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে ওই চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
তিনি জানান, ‘পহেলা জানুয়ারি সকাল ১০টা পর্যন্ত কনোন আবাসিক হোটেল, রেস্তোরাঁ, জনসমাবেশ স্থলে কেউ কোনো ধরনের লাইসেন্স করা আগ্নেয়াস্ত্র বহন করতে পারবে না। ৩০ ডিসেম্বর বিকেল চারটা থেকে এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে।’
গুলশান বনানী, বারিধারা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে বলে জানান ডিএমপি কমিশনার৷
তিনি বলেন, ‘গুলশান,বনানী, বারিধারা এলাকায় ৩১ ডিসেম্বর রাত আটটার পর কোন বহিরাগত অবস্থান কিংবা প্রবেশ করতে পারবে না। এসব এলাকায় কোনো বহিরাগত অবস্থান করলে তাদের অবশ্যই রাত আটটার আগে সেখান থেকে বের হয়ে যেতে হবে। এসব এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে আমতলী এবং কাকলি ক্রসিং ছাড়া অন্য সবরাস্তা বন্ধ করে দেয়া হবে।
‘এসব এলাকার বাসিন্দাদের রাত ৮টার মধ্যেই নিজ নিজ এলাকায় প্রবেশ করার জন্য অনুরোধ করা হলো। ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ছয়টা থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কোনো ধরনের বহিরাগত ও যানবাহন প্রবেশ করতে পারবে না।’
হাতিরঝিল এলাকায় কোনো ধরনের আয়োজন বা উদযাপন চলবে না উল্লেখ করে কমিশনার বলেন, ‘হাতিরঝিল এলাকায় এ সময়ের মধ্যে কোনো গাড়ি প্রবেশ করতে দেয়া হবে না, এই এলাকায় কোনো উৎসব করা কিংবা উচ্চ গতিতে গাড়ি চালানোর বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এছাড়াও যে কোন সমস্যায় জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে অবগত করার জন্য নগরিকদের প্রতি অনুরোধ রইলো।’