অনলাইন নিউজ : রাজধানীর বাজারে হঠাৎ করেই আগুন লেগেছে ডিমের বাজারে। বিগত মাসে ধাপে ধাপে ৫ থেকে ১০ টাকা করে প্রতি ১০০ ডিমে বাড়লেও গত দুই দিনে খুচরা বাজারে ডজন প্রতি ডিমেই বেড়েছে ১০-১৫টাকা। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) ঘুরে দেখা যায় এমন চিত্র।
মিরপুর ১৪ এর মমতা স্টোরের দোকানদার গোলাম মোস্তফা গনমাধ্যমকে বলেন, দুইদিন আগেও ৪০ টাকা হালি ডিম বিক্রি করেছি। এখন এক হালি ডিমের দাম ৪৫ টাকা। তবে এই দাম আরও বাড়তে পারে। তার কারণ হিসাবে তিনি বলেন, আগে আমরা একটি ডিম কিনতাম ৯ টাকা ৪০ পয়সা। এখন পাইকারি একটি ডিম কিনতে হয় ১০ টাকা ৭০ পয়সা দিয়ে। তাই আমাদের কিছুই করার নেই। আপাতত ৪৫ টাকা হালি বিক্রি করছি।
তিনি আরও বলেন, তবে গত দুইদিনে পাইকারি বাজারের যে অবস্থা দেখছি দাম আরও বাড়তে পারে।
একই কথা জানালেন ঢাকার রামপুরা বনশ্রী এলাকার মুদি দোকানদার মো. হেদায়েত উল্লাহ, মোতাহার হোসেন এবং মো. মাসুদ কাজী। প্রত্যেকেই জানান, প্রতিটি ডিমের পাইকারি দাম ১০ টাকা ৭০ পয়সা। এই ডিম কেউ ডজন ১৩০ টাকা, আবার অনেকে ১৩৫ টাকায় বিক্রি করছে। মো. মাসুদ কাজী বলেন, ডিমের দাম বাড়ার জন্য সবাই ডিজেলের মূল্য বাড়ার কথা বলছে। কিন্তু প্রতি ১০০ ডিমে যদি ২ দিনের ব্যবধানে ৫০টাকা বেশি রাখে তাহলে শুধু এই টাকা দিয়ে তাদের যাতায়াত ভাড়া হয়ে যাবে।
ভাষানটেক বাজারের দোকানদার তুহিন বলেন, তিনদিন আগে ১০০ ডিম ১ হাজার টাকা দিয়ে কিনেছি। সেটি এখন ১ হাজার ৭০ টাকা। এই ডিম দেয়ার সময় বলেছে আগামীকাল ডিমের দাম আরও বাড়তে পারে। সামনে প্রতিটি ডিম ১৫ টাকা করে বেচা লাগবে বলেও আভাস দিয়েছে তারা।
এদিকে হঠাৎ করেই ডিমের দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতাদের মাঝে রয়েছে অস্বস্তি। ডিজেলের মূল্য বাড়ার পর বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের প্রতিশ্রুতি পূরণ হচ্ছে না বলে মনে করছেন অনেকেই। দোকানে বাজার করতে আসা রুমি আক্তার (৩৫) বলেন, প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। ৪০ টাকা হালির মুরগীর ডিম একদিনের ব্যবধানে কিনতে হচ্ছে ৪৫ টাকা দিয়ে। দাম কমের জন্য পাঁচটি দোকান ঘুরেছি সব দোকানেই একই দাম। বাধ্য হয়ে ৪৫ টাকা দিয়েই একহালি ডিম কিনে নিয়ে যাচ্ছি।
কিন্তু কেনো বেড়েছে ডিমের দাম? এর প্রশ্নের উত্তর অবশ্য কারো কাছেই নেই। রামপুরা বনশ্রীর দোকানদার মো. হেদায়াত উল্লাহ বলেন, ডিজেলের দাম বাড়ার কথা বলছে একবার, আবার বলছে ডিমের নাকি সাপ্লাই কম। আসলে কেনো দাম বাড়ছে সেটা আমাদেরও প্রশ্ন। কেননা গ্রাহকরা তো আমাদের কথা শোনায়।
অপর এক দোকানদার বলেন, বাজার মনিটরিংয়ে আমাদের দোকানগুলোতে এসে প্রতিবার ঘুরে যায়। বেশি দাম থাকলে জরিমানা করে। কিন্তু পাইকাররা যে বেশি দামে দিচ্ছে, এদের ধরবে কে? এদের জন্য কী মনিটরিং ব্যবস্থা রয়েছে।
দেশে প্রতিদিন মুরগির ডিম উৎপাদন হয় সাড়ে তিন থেকে চার কোটি। হাঁসের ডিমের সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। করোনার পর থেকে দেশে ডিম উৎপাদন অনেক কমেছে বলে দাবি খামারিদের। করোনার সময় প্রচুর খামার বন্ধ হওয়াকে এর কারণ হিসেবে দায়ী করা হচ্ছে। তবে খুচরা দোকানদাররা মনে করছেন, ডিজেলের মূল্য বাড়ানোর সুযোগকে পুঁজি করে একটি মহল এবার ডিমের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করে বাড়তি লাভ করতে চাচ্ছে। এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ারও আহ্বান জানান তারা।
এ জাতীয় আরো খবর..