চাঁপাই খবর
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের আদিনা ফজলুল হক সরকারি কলেজসহ অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা, শিক্ষাবিদ, বিশিষ্ট সমাজ সংস্কারক ও রাজনীতিবিদ ইদ্রিস আহমদ মিয়ার ৫৮তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে বুধবার সকালে ইদ্রিস আহমদ মেমোরিয়াল ইনস্টিটিউট ও দাদনচক মডেল পাবলিক স্কুলের যৌথ উদ্যোগে আদিনা ফজলুল হক সরকারি কলেজ চত্বরে আলোাচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
এতে অতিথি হিসেবে ছিলেন- আদিনা ফজলুল হক সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আবু সালেহ মো. মুসা, উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ইমানুল হক, হাজী এশান মোহাম্মদ কারিগরি কামিল মাদরাসার সহকারী অধ্যাপক মনিরুল ইসলাম, দাদনচক হেমায়েত মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম রাব্বানী, দাদনচক মিয়াপাড়া জামে মসজিদের ইমাম সাদিকুল কালাম, আদিনা কলেজ জামে মসজিদের ইমাম তাজামুল হক ও জামালুল ইসলাম জামাল।
শেষে মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
উল্লেখ্য, ইদ্রিস আহমদ মিয়া ১৮৯৪ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর অবিভক্ত ভারতের মালদার (বর্তমান চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলা) দাদনচক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৬ সালের ৯ অক্টোবর তিনি মৃত্যুবরণ করলে তাঁর প্রতিষ্ঠিত আদিনা কলেজ ক্যাম্পাসে তাঁকে সমাহিত করা হয়।
তিনি ১৯২৬ সালে দুর্লভপুর ইউনিয়ন বোর্ডের প্রেসিডেন্ট পদের প্রার্থী হয়ে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবার মাধ্যমে সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন। তৎকালীন অবিভক্ত বাংলার সবচেয়ে জনপ্রিয় ও ‘বাংলার বাঘ’ হিসেবে খ্যাত শের-ই-বাংলা এ. কে. ফজলুল হকের অত্যন্ত প্রিয়ভাজন কৃষক প্রজা পার্টির মালদা জেলা সভাপতি, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও আঞ্চলিক নেতা ইদ্রিস আহমদ ১৯৩৭ সালে প্রাদেশিক আইন সভার নির্বাচনে কৃষক প্রজা পার্টির মনোনয়নে দক্ষিণ মালদা আসনে প্রার্থী হয়ে বিপুল ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন।
দেশ বিভাগের পর ১৯৪৮ সালে তিনি রাজশাহী জেলা বোর্ডের সদস্য নির্বাচিত হন এবং পুনর্গঠিত রাজশাহী জেলার উন্নয়ন কাজে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। দ্বিতীয়বার তিনি আইন পরিষদের সদস্য বা এম.এল.এ নির্বাচিত হন, ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে। নির্বাচিত হবার পর তিনি আবু হোসেন সরকারের প্রধানমন্ত্রিত্ব থাকাকালে পার্লামেন্টারি সেক্রেটারি নিযুক্ত হয়ে অত্যন্ত যোগ্যতা ও দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি মালদ জেলা বোর্ড ও লোকাল বোর্ডের সদস্য এবং ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবেও সাফল্যের সাথে দায়িত্ব পালন করেন।
শিক্ষা ক্ষেত্রে তিনি আদিনা ফজলুল হক সরকারি কলেজ, দাদনচক ফজলুল হক পিটিআইসহ আরো কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায়ও অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। প্রাদেশিক প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা হিসেবে তিনি ১৯৫৬ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সাথে সরকারের পক্ষে জমি অ্যাকোয়ার করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে তিনি দুইবার এর জ্যেষ্ঠতম সিনেট সদস্য ছিলেন।