জয়পুরহাট সংবাদদাতা : ছোটবেলায় ইঁদুরের গর্ত থেকে ধান বের করে তা দিয়ে মুড়ি-মোয়া খাওয়ার লোভে ইঁদুর ধরতেন আনোয়ার, পরে সেটিই হয়ে উঠে তার জীবন-জীবিকার মাধ্যম।
গত তিরিশ বছর ধরে জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর ও তার আশেপাশের উপজেলায় ফসলের ক্ষেত থেকে ইঁদুর ধরেন আনোয়ার হোসেন। এক সময় শখের বসে ধরলেও যখন জানতে পারেন ইঁদুর ধরে সেটির লেজ কৃষি অফিসে জমা দিলে গম পাওয়া যায় তখন থেকে এটিকে পেশা হিসেবে নেন তিনি।
প্রতি বছর কৃষি অফিসে ১০ থেকে ১২ হাজার ইঁদুরের লেজ জমা দিয়ে টাকা ও উপহার সামগ্রী পান আনোয়ার হোসেন।
আনোয়ার হোসেনের বাড়ি জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়নের নুরনগর গ্রামে। ইঁদুর নিধন করে ফসল রক্ষায় অবদান রাখায় কৃষি বিভাগ তাঁকে পুরস্কৃতও করেছে।
গত তিরিশ বছর ধরে ইঁদুর ধরতে ধরতে এখন তার আসল নাম মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন থেকে ইঁদুর আনোয়ার নামেই বেশি পরিচিত হয়ে উঠেছেন।
মাত্র ১৬ বছর বয়স থেকে ইঁদুর ধরেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ইঁদুর ধরার জন্য কোনো মন্ত্র পড়ি না। শুধু কৌশল অবলম্বন করি। দীর্ঘদিন ইঁদুর ধরতে ধরতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। ইঁদুর আমার কাছ থেকে দূরে পালাতে পারে না। আমাকে লোকজন এখন ইঁদুর আনোয়ার হিসেবেই ডাকেন। এতে আমি অখুশি কিংবা বিরক্ত হই না বরং খুশি হই। এ নামে ডেকে লোকজনও খুশি হন।
আনোয়ার হোসেন বলেন, আমি প্রতি বছর আক্কেলপুর কৃষি অফিসে ১০-১২ হাজার ইঁদুরের লেজ জমা দিই। এতে কৃষি অফিস আমাকে টাকাসহ বিভিন্ন উপহার সামগ্রী দিয়ে থাকে। জাতীয় ইঁদুর নিধন অভিযানে অংশগ্রহণ করে কৃষি অধিদপ্তর থেকে কয়েকবার জাতীয় পুরস্কার ও সনদ পেয়েছি। ইঁদুর ফসলের ও বাড়ির আসবাবপত্রের অনেক ক্ষতি করে। গ্রামের কৃষি পরিবারগুলো ইঁদুরের অত্যাচারে অতিষ্ঠ থাকে। আমার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা অসংখ্য কৃষি পরিবারকে এই যন্ত্রণা থেকে রক্ষা করেছে। আমি এতে খুশি।