চাঁপাই খবর
চাঁপাইনবাবগঞ্জে কর্মরত পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বিভিন্ন দাবিতে সোমবার মানববন্ধন করেছেন।
‘বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড কর্তৃক নি¤œমানের বৈদ্যুতিক মালামাল ক্রয় ও সরবরাহ, প্রয়োজনীয় মালামাল ও জনবলের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে গ্রাহক পর্যায়ে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়িয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীগণকে হয়রানি করার প্রতিবাদে এবং গ্রাহকপ্রান্তে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য দ্বৈতনীতি পরিহারপূর্বক বিআরইবি-পবিসকে একীভূতকরণসহ অভিন্ন চাকরি বিধি প্রণয়ন ও সকল চুক্তিভিত্তিক/অনিয়মিত কর্মচারীর চাকরি নিয়মিতকরণের দাবি দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষে শতভাগ গ্রাহক সেবা চালু রেখে সারাদেশে একযোগে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই মানববন্ধন করেন তারা।
বেলা ১১টা থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেনÑ চাঁপাইনবাবগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী মো. ছানোয়ার হোসেন, শিবগঞ্জ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. রেজাউল করিম, ভোলাহাট জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. ফখর উদ্দিন, নাচোল জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. আব্দুর রহিম, সমিতির সদর-কারিগরি বিভাগের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. ফিরোজ জামান, মানবসম্পদ বিভাগের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী জেনারেল ম্যানেজার মো. আরিফুর রহমান, মহারাজপুর সাব-জোনাল অফিসের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার আমিনুর রসূল, শোভন কুমার মহন্ত, সোহেলা রানাসহ অন্যরা।
মানববন্ধনে জানানো হয়, দেশের ১৪ কোটি মানুষের নিরাপদ ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং টেকসই, আধুনিক ও যুগোপযোগী বিতরণ ব্যবস্থা বিনির্মাণের লক্ষে চলতি বছরের শুরু থেকে আরইবি-পবিস একীভূতকরণসহ অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন এবং সকল চুক্তিভিত্তিক/অনিয়মিত কর্মচারীদের নিয়মিতকরণের ২ দফা দাবি আদায়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলমান রয়েছে। আন্দোলনের যৌক্তিকতা উপলব্ধি করে সরকার তথা বিদ্যুৎ বিভাগ কর্তৃক পল্লী বিদ্যুৎ সিস্টেমের সংস্কারসহ অন্যান্য সমস্যার যৌক্তিক সমাধানের জন্য ৯ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু সর্বশেষ গত ২৬ সেপ্টেম্বর কমিটির ৪র্থ সভা অনুষ্ঠিত হলেও আরইবির পক্ষ থেকে রিফর্ম সংক্রান্ত কোনো প্রস্তাব দাখিল করা হয়নি। এছাড়া আর্থিক জটিলতা না থাকা সত্ত্বেও চুক্তিভিত্তিক/অনিয়মিত কর্মচারীদের নিয়মিতকরণের বিষয়েও বিদ্যমান পরিস্থিতি বিবেচনায় তড়িৎ সমাধানে অনীহা পরিলক্ষিত হচ্ছে।
মানববন্ধনে আরো বলা হয়, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির যৌক্তিক আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। অর্থাৎ সরকারের পক্ষ থেকে সমাধানের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকলেও নানান বাহানায় কালক্ষেপণ এবং সংস্কারে অস্বীকৃতি জানিয়ে চরম বিপত্তি সৃষ্টি করে বিদ্যুৎ খাতকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)। তাছাড়া বিগত কয়েক মাস যাবত প্রয়োজনীয় মালামাল ক্রয় ও সরবরাহের ব্যবস্থা না করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছে। যে কারণে মাঠপর্যায়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলো মালামালের অভাবে (মিটার, ট্রান্সফরমার, তার ইত্যাদি) নতুন সংযোগসহ সঠিকভাবে গ্রাহক সেবা প্রদান করতে পারছে না। এ অবস্থায়, অবিলম্বে আরইবি-পবিস বিদ্যমান সংকট নিরসনের লক্ষে সোমবার সারাদেশে একযোগে এই শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। এছাড়া পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত পূর্বঘোষণা অনুযায়ী ১ অক্টোবর (আজ) থেকে বাপবি বোর্ডের সাথে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সকল ধরনের যোগাযোগ, তথ্য সরবরাহ (২ দফা বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বিষয়াদি ব্যতীত) থেকে বিরত থাকার জন্য পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
মানববন্ধন থেকে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের বৈষম্য, শোষণ, নির্যাতন ও নিপীড়ন থেকে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মুক্তি এবং দেশের ১৪ কোটি মানুষের নিরবচ্ছিন্ন ও মানসম্মত বিদ্যুৎ সেবা প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিতের লক্ষে বর্ণিত কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য অনুরোধ করা হয়।